অ্যাপস মূলত কি! সেরা ৭ দরকারি অ্যাপস। Amazing Top 7 Apps

অ্যাপস মূলত কি

অ্যাপস (Apps) হলো এপ্লিকেশন (Application) এর সংক্ষিপ্ত রুপ। অ্যাপস বলতে মানুষ সফটওয়্যার এপ্লিকেশনকেই বুঝিয়ে থাকে। অ্যাপস গুলো সাধারণত নির্দিষ্ট অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তৈরি করা হয়। যেমন Android, IOS ইত্যাদি।

অ্যাপস বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। প্রত্যেকটা অ্যাপস ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য তৈরি করা হয়।

Android ব্যবহারকারীরা Google Play Store থেকে এবং IOS ব্যবহারকারীরা Apple Apps Store থেকে অ্যাপস ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারেন।

দরকারি অ্যাপস

আজকাল অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। আর যারা এন্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করে তারা কমবেশি অ্যাপস গুলোর সাথে পরিচিত। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করাই হয় এই অ্যাপস গুলোর মাধ্যমে।

আর প্রতিটা অ্যাপস এর আলাদা আলাদা ফিচার রয়েছে। আজকে আমরা আলোচনা করব এমন কয়েকটি অ্যাপস নিয়ে। যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য খুবই উপকারী অ্যাপস। যেগুলো আমাদের ব্যবহার করা প্রয়োজন।

তবে অনেকেই ভাবতে পারে হয়ত আমরা Facebook, Messenger, Whatsapp, YouTube নিয়ে আলোচনা করব। এগুলো তো আমরা এমনিতেই ব্যবহার করে থাকি। এগুলা ছাড়াও এমন কিছু দরকারি অ্যাপস আছে যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন হয়।

চাইলে এই অ্যাপসগুলো প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আর এই দরকারি অ্যাপস গুলো আপনার সত্যিই কাজে আসবে। সেরা ৭টি দরকারি অ্যাপস।

তো চলুন তাহলে শুরু করা যাক,

মোবাইল ফোনের জন্য সেরা ৭ টি দরকারি অ্যাপস

আমি যেগুলো অ্যাপস আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সেগুলো আপনি গুগল প্লে স্টোরে ফ্রিতেই পেয়ে যাবেন। তারপরও আমি আপনাদেরকে অ্যাপস গুলোর লিংক নিচে দিয়ে দেব।

কিবোর্ড (Keyboard)

কিবোর্ড সকল ফোনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দরকারি অ্যাপস। কি বোর্ড ছাড়া ফোন ব্যবহার করা যায় না। কারন আমরা লেখালেখি চ্যাটিং এগুলো কিবোর্ড এর মাধ্যমে করে থাকি। তবে আমাদের সঠিক কিবোর্ড ব্যবহার করতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য দুটি জনপ্রিয় কিবোর্ড অ্যাপস রয়েছে।

১. Google Keyboard

গুগল কিবোর্ড একে জনপ্রিয় কিবোর্ড যেটা গুগলের তৈরি। প্লে স্টোরে এটির ৫ বিলিয়ন+ ডাউনলোড হয়েছে। এটি দিয়ে বাংলা, ইংরেজি সহ পৃথিবীর সকল ভাষায় লেখা যায়। তবে প্রথমে সেই ভাষাকে ডাউনলোড করে সেট করে নিতে হয়।

তাছাড়াও এটার ভয়েস টাইপিং সিস্টেম খুবই জনপ্রিয়। কিবোর্ড দিতে চাইলে আপনি নিজের মতো করে কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন।

→ Download Google Keyboard

২. Ridmik Keyboard

রিদমিক বাংলাদেশের প্রথম বাংলা কিবোর্ড। যেটার ৫০০ মিলিয়ন+ ডাউনলোড হয়েছে। ২০১৫ সালের ৮ ই মার্চ টি অ্যাপসটি প্রথম প্লে স্টোরে আপলোড করা হয়। বাংলা লেখার জন্য সেরা একটি কিবোর্ড হল রিদমিক কিবোর্ড।

এটাতে ইংরেজি বাদেও বাংলা লেখার অভ্র, জাতীয় এবং প্রভাত মাধ্যম রয়েছে। তাছাড়াও চাকমা এবং আরবি ভাষাও যুক্ত করা যায়। এই অ্যাপসটিতেও চাইলে আপনার মতো করে কাস্টমাইজ করতে পারবেন। থিম গুলো নিজের মত করে লাগাতে পারবেন।

এমনকি আমি নিজেও এই কি বোর্ডটা ব্যবহার করি। কীবোর্ড টা খুবই লাইট ওয়েট এবং সুন্দর। এটার আবার Ridmik Classic Keyboard নামে একটা লাইন ভার্সনও রয়েছে।

কিবোর্ড দুটিই খুব ভালো এবং দরকারি অ্যাপস। এগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

→ Download Ridmik Keyboard

এন্টিভাইরাস (Avast Antivirus)

আজকাল ভাইরাস ফোনের জন্য খুবই কমন বিষয়। কম্পিউটারের মত আমাদের ফোন গুলোও ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই এই ভাইরাস থেকে বাচার জন্য অবশ্যই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা দরকার।

তেমনিই একটা এন্টিভাইরাস অ্যাপস হলো Avast Antivirus & Security। কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা হয়তো এই অ্যাপটি সাথে পরিচিত। তবে এটার মোবাইল ভার্সন রয়েছে। এই অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনি আপনার মোবাইলে থাকা সকল ভাইরাস স্ক্যান করতে পারবেন।

স্ক্যানের মাধ্যমে কোনো ভাইরাস থাকলে সেটা নিজেনিজেই রিমুভ করে দেবে। অ্যাপসটির প্লেস্টোরে ১০০ মিলিয়ন+ ডাউনলোড রয়েছে।

তাছাড়াও অ্যাপসটি দিয়ে আপনারা ফটো, ভিডিও তে Vault এর মতো সিকিউরিটি দিতে পারবেন। এটি আপনার ফোনে থাকা জাঙ্ক ফাইলগুলো ডিলিট করে দেবে। ভাইরাসের হাত থেকে বাচার জন্য খুবই দরকারি অ্যাপস এটি।

→ Download Avast Antivirus

নোটপ্যাড (Notepad)

আমরা অনেকেই লেখালেখি করতে পছন্দ করি। অনেকেই আবার কাগজে কলমে সেগুলো লিখে রাখি। কিন্তু সেগুলোকে তো সব সময় বহন করা যায় না। তবে আপনি সেক্ষেত্রে নোটপ্যাড অ্যাপস ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ফোনে সেটা থেকে যাবে।

আপনি চাইলে যে কোন সময় সেটাকে ইডিট করতে পারবেন। আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যও সেখানে লিখে রাখতে পারেন। এজন্য Google Keep – Notes & Lists ব্যবহার করতে পারেন। গুগল প্লেস্টোর এ অ্যাপটির ১ বিলিয়ন প্লাস ডাউনলোড হয়েছে।

এই নোট অ্যাপসটি যেহেতু গুগলের তাই আপনার নোটগুলো অটোমেটিক আপনার জিমেইল ব্যাকআপ হয়ে থাকবে। তাই এগুলো হারিয়ে যাওয়ার কোন ভয় নেই।

এফবিতে আপনি নিজের মতো করে কাস্টমাইজ, কালার এবং সাইজ ঠিক করে নিতে পারবেন। চাইলে লেখার মধ্য ফটো এড করে নিতে পারবেন।

অনেক ফোনের সাথেই নোটপ্যাড এপস দিয়ে থাকে। তবে ওগুলো অতটা ভালো হয় না। আর সেগুলো Google Keep এর মতো ফিচার গুলো পাবেন না।

→ Download Google Keep

তাছাড়াও কনটেন্ট, গল্প লেখালেখির জন্য Google Docs ও ব্যবহার করতে পারেন। এটা দিয়ে চাইলে লেখা ছোট বড়, বোল্ড, এলাইনমেন্ট, টেক্সট কালার ইত্যাদি চেঞ্জ করা যায়।

→ Download Google Docs

নিউপাইপ (Newpipe)

ইউটিউব এর বিকল্প হিসেবে দারুন একটা এপস। এটি দিয়ে ইউটিউব এর মতো সকল কাজই করতে পারবেন। তবে এটাতে ইউটিউব থেকে স্পেশাল কিছু ফিচারস রয়েছে।

মূলত অ্যাপটা কি আপনারা ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোডার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এর অন্যান্য ফিচার গুলো হলো,

  • এটাতে ইউটিউবের মত এডস দেখতে হয় না।
  • এটাতে আপনি চাইলে ব্যাকগ্রাউন্ডে ভিডিও এবং অডিও প্লে করতে পারবেন।
  • চাইলে এটাতে পপআপ উইন্ডো করেও ভিডিও দেখা যায়।
  • এটা দিয়ে ইউটিউব এর যেকোনো ভিডিও ডাউনলোড করা যায়।
  • ভিডিও দেখার জন্য জিমেইল লগইন করতে হয় না।
  • আপনার পছন্দ ভিডিও চাইলে বুকমারকে সেভ করে রাখতে পারবেন।

এই অ্যাপটি ব্যবহার করা সম্পন্ন নিরাপদ। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি একটি অ্যাপ। তবে অ্যাপটি প্লে স্টোরে পাওয়া যায় না। তবে আমি নিচে লিঙ্ক দিয়েছি সেখান থেকে ডাউনলোড করে নেবেন।

→ Download Newpipe

অ্যাপস

স্টোরেজ (Storage)

আমাদের মোবাইলে অনেক ফটো, ভিডিও, ডকুমেন্ট ইত্যাদি থাকে। অনেক সময় সেগুলো হারিয়ে যেতে পারে। যেমন মোবাইল চুরি হয়ে গেলে অথবা মেমোরি কার্ড নষ্ট হয়ে গেলে।

সে ক্ষেত্রে আমরা চাইলে সেগুলোকে অনলাইনে স্টোর করে রাখতে পারি। যার ফলে যে কোন ডিভাইস থেকে যেকোনো সময় সেগুলো আমরা ব্যবহার করতে পারবো। এভাবে সেগুলো হারানোর বা নষ্ট হয়ে যাবার কোন ভয় থাকে না।

Google Drive

অনেকে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করে থাকেন। গুগল ড্রাইভ একটু গুগলের জনপ্রিয় স্টোরেজ অ্যাপ। এখানে ফ্রিতে ১৫ জিবি পর্যন্ত দিয়ে থাকে। চাইলে একটা জিমেইল অ্যাকাউন্ট লগইন করে এখানে আপনার ডাটা গুলো রাখতে পারবেন।

→ Download Google Drive

Mega

মেগা একটি স্টোরেজ ড্রাইভ অ্যাপ। এখানে একাউন্ট করার সাথে সাথে আপনি ৫০ জিবি ডাটা রাখার সুযোগ পেয়ে যাবেন। আমাদের অনেক সময় বেশি থাকে যেটা গুগল ড্রাইভে রাখা সম্ভব হয় না। আর এখানে একটা অ্যাকাউন্টই ৫০ জিবি ডাটা রাখার সুযোগ পেয়ে যাবেন।

অ্যাপটির গুগল প্লে স্টোরে ৫০ মিলিয়নের প্লাস ডাউনলোড হয়েছে। এটিও একটা দরকারী অ্যাপস। চাইলে আপনারা ব্যবহার করতে পারেন।

→ Download Mega

ফটো ইডিটর (Photo Editor)

আমরা কম বেশি সবাই ফটো এডিট করতে পছন্দ করি। অনেকেই আবার মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে থাকেন। ছোটখাটো এডিটিং মোবাইলে ভালোভাবে করা সম্ভব। তেমনি একটি দরকারি অ্যাপস হলো PicsArt.

Picsart

ফটো এডিটিং এর জন্য সেরা একটি অ্যাপস। গুগল প্লেস্টোরে ১ বিলিয়নের বেশি ডাউনলোড রয়েছে। এটা দিয়ে চাইলে আপনি যে কোন ফটো এডিটিং করতে পারবেন। মনের মত করে সাজিয়ে নিতে পারবেন।

অ্যাপসটিতে আবার AI দিয়ে ফটো এডিট করা নতুন ফিচারসও এসেছে। গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজগুলোও এই অ্যাপটি দ্বারা করা সম্ভব। তবে ফ্রি ভার্সনের সবগুলো ফিচারগুলো আনলক করা নাই। তবে আপনি প্রিমিয়াম ভার্সন ক্রয় করে বাকি ফিচার্স গুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

→ Download Picsart

এই ছিলো দরকারি অ্যাপস গুলো নিয়ে রিভিউ। আশা করি আপনাদের এই সেরা ৭টি দরকারি অ্যাপস গুলো কাজে আসবে।

আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও পড়ুন,

ভিপিএন কি? ভিপিএন এর কাজ কি?

ওয়েব সিরিজ কি? ওয়েব সিরিজ কিভাবে দেখা যায়?

1 thought on “অ্যাপস মূলত কি! সেরা ৭ দরকারি অ্যাপস। Amazing Top 7 Apps”

  1. Pingback: ফেসবুক হ্যাকিং থেকে বাঁচার উপায়। Best 7 Tips

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top